বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫০ অপরাহ্ন
গৌরনদী প্রতিনিধি॥ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার ভূরঘাটা বাসস্ট্যান্ডে বাসের ছাদে ব্যারেলের মধ্যে মরদেহ পাওয়া ছাবিনা বেগমের ঘাতককে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঘাতকের স্ত্রী রহিমা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের স্থান চিহ্নিত এবং হত্যায় ব্যবহৃত হ্যামার এবং রশির অংশ বিশেষও জব্দ করা হয়েছে। প্রধান ঘাতক গৌরনদীর মাহিলাড়ার খালেক হাওলাদারকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, রোববার দুপুরে নগরীর কাশীপুরস্থ খালেকের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ঘাতককে পাওয়া না গেলেও তার স্ত্রী রহিমা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। একইসঙ্গে হত্যাকাণ্ডের স্থান নগরীর কাশীপুরে নির্মাণাধীন ওই ভবনের নিচতলা পরিদর্শন করি। এ সময় সেখান থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি হ্যামার এবং গলায় ফাঁস দেয়ার কাজে ব্যবহৃত রশির অংশবিশেষ উদ্ধার করা হয়।
ওসি আরো জানান, আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে গত শুক্রবার সকালে কৌশলে ছাবিনাকে বরিশাল নগরীর কাশীপুরে ডেকে নেয় খালেক। কর্মস্থল নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে খালেক তার মাথার পেছনে হ্যামার (বড় হাতুরি) দিয়ে আঘাত করে গলায় রশি পেঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। হত্যাকাণ্ডের পর শুক্রবার রাতে মরদেহ গুম করতে ব্যারেলের মধ্যে ঢুকিয়ে গড়িয়ারপাড় বাসস্ট্যান্ড থেকে ভূরঘাটাগামী বাসের ছাদে তুলে দেয় খালেক।
গত শনিবার শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় থানার এসআই আব্দুল হক বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে গত শনিবার হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ছাবিনার দেবর মনির হাওলাদার জানান, কাতার যাওয়ার জন্য মাহিলাড়ার খালেক হাওলাদার তার ভাবীর (ছাবিনা) কাছে ৪ লাখ টাকা দেয়। বিদেশ পাঠাতে বিলম্ব হওয়ায় এক পর্যায়ে খালেক টাকা ফেরত চায়। ছাবিনা বেগম তাকে দেড় লাখ টাকা ফেরত দেয়। বাকী আড়াই লাখ টাকা পায় খালেক। পাওনা টাকার জন্য বিভিন্ন সময় তাগাদা দিতো খালেক। বিদেশ যেতে না পেরে খালেক নগরীর কাশীপুর আনসার ব্যাটালিয়ন অফিস সংলগ্ন ভূঁইয়াবাড়ি মসজিদের পাশে মাহিলাড়ার বাসিন্দা ব্যাংকার সচীন রায়ের নির্মাণাধীন ভবনে ম্যানেজার হিসেবে কাজ নেয়।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার বাসটি গৌরনদীর ভূরঘাটায় যাওয়ার পর কেউ ব্যারেল নিতে না যাওয়ায় বাসের শ্রমিকদের সন্দেহ হয়। পরে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে ব্যারেল খুলে মরদেহ দেখে বাসের হেলপার। এরপর পুলিশকে খবর দিলে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে ছাবিনার মুঠোফোন ট্র্যাকিং করে পুলিশ তার পরিচয় জানতে পারে। এরপর ছাবিনার দেবর মনির এসে তার ভাবীর মরদেহ সনাক্ত করে।
নিহত ছাবিনা ওই উপজেলা পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের দিয়াসুর এলাকার সৌদি প্রবাসী শফিকুল ইসলামের স্ত্রী। তিন সন্তানের জননী ছাবিনা পার্শবর্তী মুলাদী উপজেলার নাজিরপুর এলাকার সাহেব আলীর মেয়ে। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। কাতার প্রবাসী স্বামীর সহায়তায় বিদেশে লোক পাঠাতেন ছাবিনা।
Leave a Reply